গলাকাটা ভাড়া বন্ধের দাবীতে জকিগঞ্জে বিশাল মানববন্ধন: কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারী
সিলেটের সংবাদদাতা:: জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কে গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য ও গলাকাটা ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে যাত্রীরা। ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। বাড়তি ভাড়া আদায় নিয়ে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও হেলপারের সঙ্গে যাত্রীদের হাতাহাতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। যাত্রী হয়রানী ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধসহ ৭ দফা দাবী নিয়ে রোববার বিকেল ৩টার দিকে জকিগঞ্জ শহরের এমএ হক চত্বরে বিশাল মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জকিগঞ্জ যাত্রী অধিকার পরিষদ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কে যাত্রীদের কাছ থেকে গলাকাটা ভাড়া আদায় করছে গণপরিবহনের শ্রমিকরা। গ্যাসচালিত ছোট-বড় গাড়িগুলোতেও ভাড়া নৈরাজ্য চরম পর্যায় পৌছেছে। গণশুনানী কিংবা যাত্রীদের প্রতিনিধিদের সাথে কোন ধরণের আলাপ-আলোচনা না করে গলাকাটা ভাড়া আদায় করতে দেয়া হবেনা। অহেতুক ভাড়ার বিরুদ্ধে জকিগঞ্জবাসী গর্জে উঠেছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে গণবিরোধী গলাকাটা ভাড়া আদায় বন্ধ করতে পরিবহন মালিক ও প্রশাসন ব্যর্থ হলে সাধারণ জনগন কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। এ আন্দোলনে আইন শৃঙ্খলার কোন অবনতি ঘটলে গণপরিবহন মালিকরা ও প্রশাসন এর দায়ভার গ্রহণ করতে হবে। সাধারণ জনগনের দাবী না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রাজনীতিবীদ এমএজি বাবর, আজমল হোসেন, আব্দুল কাইয়ুম, মাওলানা আফতাব আহমদ, দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী, সালেহ আহমদ জালালী, পারভেজ আহমদ, সুমন আহমদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। মানবন্ধনে অংশ নেন অসংখ্য লোকজন।
বক্তারা আরও বলেন, আগে সিলেট থেকে শেওলা-জকিগঞ্জ ৬০ কিলো সড়কে ভাড়া ছিলো ৭০ টাকা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৮ টাকায়, রতনগঞ্জ-আটগ্রাম ৭৪ কিলো সড়কে ভাড়া ৮৫ টাকা এখন ১৩৩ টাকা, জকিগঞ্জ-কালিগঞ্জ ৯০ কিলো সড়কে আগে ১০৫ টাকা ছিলো এখন ১৬২ টাকায় দাঁড়িয়েছে। তাছাড়াও আগে যেখানে ৮ টাকায় যাওয়া যেত সেখানে এখন ১৫ টাকা আদায় করা হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে শ্রমিকদের হাতে লাঞ্চিত হতে হয়। দেশের মানুষ করোনার প্রভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে ভাড়া নৈরাজ্য হলে কোনভাবেই মেনে নেয়া হবেনা। এ সড়কে দ্রæত বিআরটি বাস সার্ভিস চালু করতে হবে।
তাঁরা আরও বলেন, জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কের গণপরিবহনের জন্য সিলেটের জেলা প্রশাসক যদি গণশুনানী করে ভাড়া নির্ধারণ করে দেন তাহলে সাধারণ মানুষ নৈরাজ্য থেকে মুক্তি পাবে। জেলা প্রশাসকের নির্ধারিত ভাড়া তালিকা পেলে সাধারণ মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম থেকে ঘরে ফিরবে। মানবন্ধন থেকে প্রশাসনের প্রতি ৭টি দাবী জানানো হয়। দাবীগুলো হলো, সরকার নির্ধারিত ন্যায্য ভাড়া নিশ্চিত করে তালিকা টাঙ্গানো, যাত্রী হয়রানী বন্ধা করা, অধিক যাত্রী বহন নিষিদ্ধ, ফিটনেসবিহীন গাড়ি বন্ধ, দক্ষ ও বৈধ লাইসেন্সধারী চালক দিয়ে গাড়ি চালানো, গেইটলক ও বিরতিহীন গাড়ি যত্রতত্র থামানো বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের ভাড়া অর্ধেক করার জোর দাবী জানানো হয়।