সিলেট প্রতিনিধি::
গত ২১ তারিখ ভোর সাড়ে তিনটার নাগাত সিলেট ওসমানী মেডিকেলে ইমারজেন্সী বিভাগে প্রচন্ড পেটে ব্যাথা নিয়ে ভর্তি হন একজন রোগী (৫৪) বয়সী। ঘটনার কথা উল্লেখ করে, ভুক্তভোগী রোগীর স্বজনরা জানান সেখানে তারা চিকিৎসার জন্য গেলে কয়েক ঘন্টা পরে একজন চিকিৎসক আসে। এসে রোগীর প্রচন্ড আহাজারি দেখে ঔষধ লেখে দেন। তৎক্ষণাৎ ঔষধ নিয়ে আসেন রোগী স্বজনরা।পরে আর ডাক্তার নেই বলে জানান নগর টিভিকে।তারপর রোগী আহাজারি দেখে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে দায়িত্বে থাকা ইমারজেন্সি রোম( ৩১) নুরুল নামে এক ওয়ার্ড বয় আসে।ঐ সময় রোগীর আহাজারি কথা জানান আত্বীয় স্বজনরা।এই সময় নুরুল নামে এক ওয়ার্ড বয় এসে ডাক্তারের দেওয়া ইনজেকশন, সেলাইন,ব্যন্ডিস,ইত্যাদি সে নিজের ব্যবহার করে রোগীর শরীরে। আর ও জানা যায় উপযুক্ত ট্রেনিং না থাকায় একটার পর একটা সিরিন পোস্ট করতে থাকে।ঐ সময় রোগীর স্বজনদের সন্দেহ সৃষ্টি করে। এলোপাতাড়ি ভাবে সেলাইন,ইনজেকশন রেগীর শরীরে পোস্ট করলে রোগী অনেক জ্বালা আর কষ্ট বেরে যায় পরে ঔ সময় সমপূর্ন কাজ না সেরে ঔষধ চুরির জন্য চেষ্টা করে।এক পর্যায় ঔষধ চুরি করে নেয় ওয়াড বয় নুরুল। আর ও জানা যায় যে, সহকারী ওয়ার্ডে দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ড বয় শুকুর(২৪) নামে তিনি জানান, রাত তিনটার পর সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে ইমারজেন্সি বিভাগে এই রকম ঘটনা ঘটে। কোন নার্স বা ডাক্তার আসেন না।এইভাবে চলছে অনিয়মের মাধ্যমে চিকিৎসা। পরে সকাল হলে ভুক্তভোগী রোগীকে তাদের আত্বীয় স্বজনরা মেডিকেল ত্যাগ করে পরে অন্য একটি মেডিকেলে ভর্তি হন। এই বিষয়ে অভিযোগ করতে গেলে অভিযোগ কক্ষে কাউকে খুঁজেে পাওয়া যায় না বলে জানা যায়।
সিলেটে একমাত্র সরকারি সেবা দেওয়া এই প্রতিষ্ঠানে চলছে রোগীরদের সাথে অশালীন আচর,আর ঔষধ চুরি সহ অনেক প্রতারনার অভিযোগ।এই দিকে এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশের বিভাগীয় শহর সিলেটে অবস্থিত চিকিৎসা বিষয়ক উচ্চ শিক্ষা দানকারী একটি প্রতিষ্ঠান।[৩] সরাসরি সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়; যা বর্তমানে দেশের একটি অন্যতম প্রধান চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে ১৯৬২ সাল থেকে ১ বছর মেয়াদী হাতে-কলমে শিখনসহ (ইন্টার্নশিপ) স্নাতক পর্যায়ের ৫ বছর মেয়াদি এম. বি. বি. এস. শিক্ষাক্রম চালু রয়েছে; যাতে প্রতিবছর ২৩০ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়ে থাকে এবং ২০১২ সাল থেকে ৪ বছর মেয়াদী বি. ডি. এস. ডেন্টাল ডিগ্রি চালু রয়েছে। যেখানে প্রতিবছর প্রায় ৫২ জনের মত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।[৪] মূল কার্যক্রমের পাশাপাশি নার্সদের প্রশিক্ষণের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
একটি কুঁড়ির দেশ হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরাণ (রহ.) সহ ৩৬০ আউলিয়ার স্মৃতি বিজরিত পূণ্যভূমি সিলেটের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী এই সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান হিসাবে সকলের কাছে পরিচিত।১৯৩৬ সালে সিলেটের প্রাণকেন্দ্র পুরাতন মেডিকেল এলাকায় স্বল্প পরিসরে যাত্রা শুরু হয় এ হাসপাতালের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ ও সংযুক্ত বার্মা ফ্রন্টের জন্য এটাকে Cater এ রুপান্তরিত করা হয়। ১৯৪৮ সালে সিলেট মেডিকেল স্কুল হিসেবে উন্নীত হয় বলে জানা যায়। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত ৩০০ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। পাঁচ বছরের কোর্স শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রদান করা হতো MBBS ডিগ্রী। জন সাধারনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও কলেজ এবং হাসপাতালের প্রয়োজনে ১৯৭৮ সালে বর্তমান অবস্থান কাজল হাওর এলাকায় সুবিশাল পরিসরে ২৫ একর ভূমি নিয়ে ৫০০ বেডের হাসপাতাল হিসেবে স্থানান্তর করা হয়।
এইদিকে এই হাসপাতালের অনেক ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে বলে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধাদের সেবায় এই হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ ছিলেন নিবেদিত প্রান। সর্বাধিনায়ক সিলেটের কৃতিসন্তান বঙ্গবীর মোহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর নামকরণ করা হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। তবে যে ইচ্ছে নির্মাণ করা হয়েছিল সেই ইচ্ছে আজ শূন্যতায় ভরিয়ে যাচ্ছে। মেডিকেল ব্যবস্থায় চাঁদাবাজি,অনিয়মিত, ঔষধ চুরির মতো ঘটনাগুলো ঘটে যাচ্ছে। তাই এই দিকে কতৃপক্ষের নজর খুব অবহেলায় পরে আছে।