১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা।আমরা হারিয়েছি ৩০ লক্ষ্য প্রান,সম্ভ্রম হারিয়েছে ২ লক্ষ মা বোন।সারা দেশের প্রতিটি আনাচে কানাচে প্রতিটি মানুষের অন্তরে বেজেছিল যুদ্ধের দামামা।সবাই অপেক্ষায় ছিলো একটি স্বাধীন সূর্যের।যুদ্ধে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় নারায়নগঞ্জের বক্তাবলী পরগনার অবধান অবিস্মরণীয়।কৃষির উপর নির্ভরশীলএই অঞ্চলের অসংখ্য বীর সেনানি অংশ নিয়েছিলো স্বাধীনতা যুদ্ধে।
যুদ্ধের প্রায় শেষের দিকে ১৯৭১ সালের ২৯ সে নভেম্বর এক কাকডাকা ভোরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আক্রমণ চালায় নদীভেষ্টিত এই চরাঞ্চলে।
যা এই পরগনার মানুষের জন্য এক বেদনাদায়ক অধ্যায়। বক্তবলীতে আছে মুক্তিযুদ্ধাদের ক্যাম্প এই তথ্যের ভিত্তিতে এদেশীয় আলবদর রাজাকারদের সহযোগিতায় সেদিন নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অতর্কিত হামলা চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। আগুন লাগিয়ে দেয় গোপালনগর লক্ষ্মীনগর মুক্তারকান্দি গঙ্গানগর সহ প্রায় ২২ টি গ্রামে । হত্যা করে ১৩৯ জন মানুষকে যার মধ্যে ছিল ছাত্র,শিক্ষক,ডাক্তার,শ্রমজীবী সহ ও নিরস্ত্র কৃষক । অধিকাংশ মানুষকে ধরে আনা হয় ধলেশ্বরীর তীরে এবং সেখানে দাঁড় করিয়ে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলি করার পর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বেয়ানটের আঘাতে আঘাতে সারা শরীর জখম করে নরপিশাচ পাকিস্তানি বাহিনী।
সেদিন পাকিস্তানি বাহীনির নির্মমতার হাত থেকে রক্ষা পায়নি যুবক, বৃদ্ধ,মহিলা কিংবা শিশু। পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচার থেকে বাচার জন্য মানুষ সেদিন দিশেহারা হয়ে যায়।তারা একটি নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দিকবেদিক ছুটতে থাকে।কেউ কেউ ছুটেছে এলাকার বাইরে কেউবা অবস্থান নিয়েছিলো মসজিদে। কিন্তু মসজিদে অবস্থান নিয়েও তারা রক্ষা পায়নি। পাকিস্তানি বাহিনী মসজিদ থেকে যুবকদের ধরে নিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে।
সেদিন কেউ হারিয়েছে বাবা,কেউ হারিয়েছে ভাই কেউ হারিয়েছে মা ও বোন। ২৯ সে নভেম্বর আসলে এখনো স্মজন হারানোর আর্তনাদে কেপে ওঠে এই পরগনা। তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে এলাকাবাসী ও প্রসাশন নিচ্ছে নানা পদক্ষেপ।
কিন্ত রয়েছে আক্ষেপ ও। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও সঠিক ভাবে লিপিবদ্ধ হয়নি দেশের জন্য প্রান উৎসর্গকারী ১৩৯ জনের ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধারা কিংবা নিহতের স্মজনরা পায়না কোনরূপ সরকারি সহায়তা।
তাছাড়া ২৯ সে নভেম্বরকে জাতীয় ভাবে বক্তাবলী গনহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য এই অঞ্চলের মানুষের যে দীর্ঘদিনের দাবী তা ও পূরন হয়নি।
তাই এই দাবী গুলো পূরনের জন্য এলাকাবাসী সরকারর ও প্রসাশনের বিশেষ দৃষ্টি কামনা করেন।