মোহাম্মদ ছালাহ্ উদ্দিন উজ্জ্বল ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহে পুলিশ পরিদর্শক ওসি শাহ কামাল আকন্দ আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, মাদক ও বিট পুলিশিং কার্যক্রম সচল করে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে চলছেন। কৌশলী ও দায়িত্বশীল এই পুলিশ কর্মকর্তা তার অবস্থান ধরে রেখেছেন। টানা তিন বছরেরও বেশি সময় ময়মনসিংহে ডিবির ওসি থাকাকালে প্রায় প্রতিমাসেই উদ্ধার, গ্রেফতার, ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে জেলায় সেরা বিবেচিত হন।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি হিসাবে দায়িত্বপালন কালেও সেই সেরা অবস্থান ধরে রেখেছেন। বুধবার জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভায় অক্টোবর মাসে সেরা অফিসার ইনচার্জ বিবেচিত হয়েছে। এছাড়া দুর্গাপূজাকালীন সময়ে যানবাহন চলাচল এবং ট্রাফিক জ্যাম নিয়ন্ত্রণে রাখায় ময়মনসিংহ ট্রাফিক বিভাগকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমানের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভা পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামানের সভাপতিত্বে এই সভা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাল্গুনী নন্দির সঞ্চালনায় সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বী, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ, ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ওসি ডিবি সফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সভায় কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দসহ ৯ পুলিশ কর্মকর্তাকে উত্তম, ভাল এবং সেরাকাজের জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছে। এই সকল সেরা পুলিশ সদস্যদেরকে পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান সনদপত্র ও সম্মাননা প্রদান করেন।
দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে বিট পুলিশিং ও কমিউনিটি পুলিশিংকে সচল এবং জনগণের মাঝে পুলিশী সেবা মনোভাবকে জাগ্রত করা, নিয়মিত মামলা নিস্পত্তি, মাদকসহ অন্যান্য চোরাইপণ্য উদ্ধার, নিয়মিত মামলার আসামী গ্রেফতার, ওয়ারেন্ট তামিল এবং সাজা পরোয়ানাভুক্ত পলাতক সর্ব্বোচ্য সংখ্যক আসামী গ্রেফতার করায় কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ অক্টোবর মাসের জন্য সেরা অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত হয়েছেন।
একই সাথে কোতোয়ালীর এসআই আনিছুর রহমান অক্টোবর মাসে ১০টি ওয়ারেন্ট তামিল করা তিনি শ্রেষ্ট ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার নির্বাচিত হয়েছে। ট্রাকসহ ১৫ কেজি গাজা ও ৬০০ শত পিচ ইয়াবা উদ্ধারে ডিবির এসআই আব্দুল জলিল শ্রেষ্ট মাদক উদ্দারকারী অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন। মুক্তাগাছার একটি ক্লুলেস হত্যার মামলার রহস্য উদঘাটন করায় মুক্তাগাছা থানার পুলিশ পরিদর্শক চাদ মিয়া ও ডিবির এসআই আজগর আলী শ্রেষ্ট হয়েছেন।
এছাড়া ডিবি পুলিশের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ বিভিন্ন মামলার রহস্য উদঘাটন ও অপরাধীদেও গ্রেফতাওে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করায় এলআইসি বিভাগকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। কলেজ ছাত্রী গণধর্ষণ মামলার আসামী রাকিবকে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে লুঙ্গি পড়ে ছদ্দবেশ ধারণ করে গ্রেফতার করায় হালুয়াঘাট থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত ইমরান আল হোসাইনকে শ্রেষ্ট পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এর আগে পুলিশ সুপার তার বক্তব্যে বলেন, অতি অল্প সময়ে কোতোয়ালীর ওসি শাহ কামাল আকন্দ ওয়ারেন্ট তামিল, পলাতক, ফেরারী ও নিয়মিত মামলার আসামীদের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এন দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। উত্তম ও ভাল কাজের প্রতি পুলিশকে আরো অধীক মনোযোগী করতে এবং দায়িত্ববোধকে জাগ্রত এবং ভাল কাজে আরো উৎসাহিত করতে এই পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে।
আগামীতে দায়িত্বহীনতার জন্য তিরস্কার করা হবে। যাতে প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিশ সদস্যরা আরো উজ্জীবিত হয়ে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে। ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, বিভাগীয় নগরীতে মাদক ব্যবসায়ীদের থাকতে দিব না।
এছাড়া কোতোয়ালী মডেল থানায় এসে কেউ হয়রানীর স্বীকার হবে না। একই সাথে থানায় মামলা বা জিডি করতে কারো কোন অর্থের প্রয়োজন হবেনা। বিট পুলিশের বিভিন্ন সভায় এ ধরণের প্রকাশ্য ঘোষণা কোতোয়ালী মডেল থানায় দীর্ঘদিন পর স্বচ্ছতা ফিরে এসেছে।
নগরবাসির মতে, শিক্ষানগরী ময়মনসিংহের বিভিন্ন ছাত্রাবাসে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের উপর স্থানীয় বখাটে বহিরাগত ও মাদক ব্যবসায়ীদের অত্যাচার, নির্যাতন, চাদাবাজি ও জোর করে ছাত্রদেরকে মাদক সেবনে বাধ্য করার মত একাধিক অভিযোগে একাধিক ছাত্রমেসে ধারাবাহিক বৈঠক করায় নির্যাতনরোধ হয়েছে।
অপরদিকে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে রাত্রীকালিন অভিযানে মাদক ব্যবসায়ীরা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। ফলে কোতোয়ালী এলাকার আইন শৃংখলা ক্রমেই উন্নতি হচ্ছে।