নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলী লক্ষীনগর ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মডেল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ আ.ন.ম অলিউল্লাহর সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম রক্তাক্ত জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও মাদ্রাসার অফিস সহকারী মিজানুর রহমান সেলিমকে মারধর করে গুরুতর আহত ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়া হয় যেখানে গুরুত্বপূর্ণ নথি সহ প্রায় ১লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা ছিলো বলেও জানা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসার বর্তমান সিনিয়র শিক্ষক ও অফিস সহায়ক (পিয়ন) মিজানুর রহমান সেলিম (৩৯) কে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজুলেশন অনুমোদনের জন্য নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলায় তলব করে। তার প্রেক্ষিতে ৯ সেপ্টেম্বর (সোমবার) দুপুর অনুমান ০১.০০ ঘটিকার সময় মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক হিসাব রফিকুল ইসলাম ও মাদ্রাসার অফিস সহায়ক সেলিম (পিয়ন) রেজুলেশন অনুমোদনের জন্য নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলায় নির্বাহী অফিসারে কার্যালয়ে পৌছাইলে সাবেক অধ্যক্ষ অলিউল্লাহ তার দুই ছেলে ফুয়াদ ও মাহফুজ তার ভাগিনা মাহামুদ সহ অজ্ঞাত ২০/২৫ অতর্কিত হামলা চালিয়ে সিনিয়র শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও অফিস সহকারী সেলিমকে গুরুতর আহত করে এবং মাদ্রাসার গুরুত্বপূর্ণ নথি ও নগদ টাকা সহ ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে শাহ মোহাম্মদ আব্দুল আজিজের পুত্র মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ উল্লেখ করেন
আবু নোমান মুহাম্মদ অলী উল্লাহ পিতা- মৃত মুহাম্মদ মজিবুর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ আব্দুল্লা আল ফুয়াদ, উভয় পিতা- আবু নোমান মুহাম্মাদ অলী উল্লাহ, আব্দুল্লাহ আল মাহামুদ (পিতা- অজ্ঞাত, সর্ব সাং মুন্সিবাগ, কুতুবপুর, থানা- ফতুল্লা, জেলা- নারায়ণগঞ্জ সহ আরো অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জন বিবাদীদের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, উক্ত ১নং বিবাদী বক্তাবলী ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ ছিলেন এবং আমি উক্ত মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক। ১নং বিবাদী তাহার দায়িত্বরত জীবনে বহু অপকর্মের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত মাদ্রাসার ছাত্র জনতার আন্দোলনের তোপের মুখে পড়িয়া স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। বিবাদীরা তাহার পর হইতেই আমাকে ও মাদ্রাসায় কর্মরত অন্যান্য শিক্ষকদেরকে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি ও হুমকি ধামকি প্রদান করা সহ নানানভাবে হয়রানী করিয়া আসিতেছে এমনকি ছাত্রজনতার যৌক্তিক দাবীকে সাধুবাদ জানানো অত্র এলাকার সাধারণ লোকজনদেরকে হয়রানী করিয়া আসিতেছে। এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য- ০৯/০৯/২০২৪ ইং তারিখে আমি অর্থাৎ অত্র মাদ্রাসার বর্তমান সিনিয়র শিক্ষক ও অফিস সহায়ক (পিয়ন) মিজানুর রহমান সেলিম (৩৯) কে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় রেজুলেশন অনুমোদনের জন্য নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলায় তলব করে। অদ্য-০৯/০৯/২০২৪ ইং তারিখ দুপুর অনুমান ০১.০০ ঘটিকার সময় আমি অত্র মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক হিসাবে ও অত্র মাদ্রাসার অফিস সহায়ক (পিয়ন) রেজুলেশন অনুমোদনের জন্য নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলায় নির্বাহী অফিসারে কার্যালয়ে পৌছাইলে ১ হইতে ৪নং বিবাদীগণ অজ্ঞাতনামা বিবাদীদেরকে নিয়া লাঠিসোঠা বে-আইনী জনতারদ্ধে দলবদ্ধ হইয়া আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। অতঃপর বিবাদীরা আমার উপর ঝাপাইয়া পরিয়া বেধরক মারপিট শুরু করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা ও গুরতর জখম করে। ১নং বিবাদী আমার গলায় চাপিয়া ধরিয়া শ্বাসরোধ করিয়া হত্যার চেষ্টা করে এবং ৩নং বিবাদী সহ অন্যান্য বিবাদীরা লাঠিসোঠা দ্বারা বেধরক মারপিট করিতে থাকে। মারধরের সময় ২নং বিবাদী আমার সহিত থাকা একটি অফিসিয়াল ব্যাগ নিয়া যায় যাহার মধ্যে থাকা অত্র মাদ্রাসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সহ আমার ব্যাক্তিগত ও নিজস্ব নগদ-২,৬৫,০০০/-(দুই লক্ষ পয়ষট্টি হাজার) টাকা ছিল। ১ হইতে ৪নং বিবাদীগণ অফিস সহায়ক (পিয়ন) মিজানুর রহমান সেলিমকে লাঠিসোঠা দ্বারা বেধরক মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা ও গুরতর জখম করে এবং ৪নং বিবাদী মিজানুর রহমান সেলিমের পাঞ্জাবীর পকেটে থাকা নগদ-৭,৫০০/-(সাত হাজার পাঁচশত) টাকা নিয়া যায়। আমাদের ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন আগাইয়া আসিয়া আমাদেরকে বিবাদীদের কবল হইতে কোনমতে রক্ষা করিলে বিবাদীরা আমাদেরকে বলে যে, যদি এই বিষয়ে কোন প্রকার আইন আদালত করিস তাহা হইলে তোদেরকে যেখানে পাবো চিরতরে প্রাণে মারিয়া ফেলিবো মর্মে হুমকি প্রদান করে। বিবাদীদের এহেন কার্যকলাপের দরুণ আমি ও অত্র মাদ্রাসার অন্যান্য কর্মরতদেরকে নিয়া চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিবাদীরা যেকোন সময় আমাদের যেকোন বড় ধরণের ক্ষতি সাধন করিতে পারে বলিয়া আমার আশঙ্কা হইতেছে।
উপরোক্ত বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বাদী রফিকুল ইসলাম।